এসএম.দেলোয়ার : প্রতিটি মুসলিমের কাছে জুমার দিন ও নামাজের গুরুত্ব অনেক বেশি হওয়া দরকার।কারন মহাগ্রন্থ কোরআনুল কারিম ও নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী থেকে জুমার ফজিলত ওঠে এসেছে। ফলে জুমার দিনের রয়েছে আলাদা মর্যাদা।জুমার দিনের নামাজ প্রতিটি মুসলমানের জন্য বিশেষ ইবাদত। এর মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের বিশেষ নেয়ামত ও অনুগ্রহ দান করেন। এ নেয়ামত ও অনুগ্রহে বান্দার মর্যাদা অনেক বেড়ে যায়। এ কারণে প্রত্যেক মুসলমানের জন্য জুমার নামাজ পড়া জরুরি।তাই ইচ্ছাকৃতভাবে অলসতাবশত জুমার নামাজ থেকে বিরত থাকা মারাত্মক অপরাধ।
তাদের জন্য আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে রয়েছে মারাত্মক শাস্তির ঘোষণা। জুমআর নামাজ আদায়ের ব্যাপারে আগ্রহ না দেখিয়ে শুধু কাজ-কর্মে যারা নিজেদের ব্যস্ত রাখে, আল্লাহ তাআলা সেসব বান্দার দিকে রহমতের দৃষ্টিতে তাকান না।শুক্রবার বা জুমার দিন যোহরের চার রাকাত নামাজের পরিবর্তে দুই রাকাত আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর ফরজ।
অন্য নামাজ যারা পড়েন না তারাও জুমার নামাজ আদায় করেন। কিন্তু অনেকেই জানেন না কতো রাকাত জুমার নামাজ পড়তে হয়।জুমার দিন যে ব্যক্তি গোসল করে পূর্বাহ্ণে প্রথম ভাগে মসজিদে গমন করে, পায়ে হেঁটে মসজিদে যায় (অর্থাৎ কোনো কিছুতে আরোহণ করে নয়), ইমামের খুব কাছাকাছি গিয়ে বসে, মনোযোগ দিয়ে খুৎবা শোনে, কোনো কিছু নিয়ে খেল তামাশা করে না, সেই ব্যক্তির প্রতিটি পদক্ষেপের জন্য রয়েছে বছরব্যাপী রোজা পালন এবং সারা বছর রাত জেগে ইবাদত করার সমতুল্য সওয়াব পাওয়া যায়!জুমার নামাজের ওয়াক্ত যোহরের ওয়াক্তের সময়। জুমার দিন দুপুরে গোসল করে পরিষ্কার পোশাক পরিধান করে আজানের সঙ্গে সঙ্গে মসজিদে উপস্থিত হয়ে নামাজ আদায় করা উত্তম।
কত রাকাত জুমার নামাজ পড়তে হয়? ৪ রাকাত ক্বাবলাল জুমা, তারপর খুতবা পাঠের পর ২ রাকাত ফরজ নামাজ। তারপর চার রাকাত বা’দাল জুমা আদায় করতে হয়।তবে সময় থাকলে জুমার দিন তাহিয়্যাতুল ওজু ২ রাকাত সুন্নত, দুখলুল মসজিদ ২ রাকাত সুন্নত ও নফল নামাজ আদায় করা উত্তম। যদিও ওই নামাজগুলো জুমার নামাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়।উল্লেখ্য, জুমার দিন সাধ্য থাকলে নতুন জামা কিংবা পাঞ্জাবি পরতে পারেন। এছাড়া খুশবু নেয়া, হাত-পায়ের নখ কাটাও সুন্নত।
জুমার দিনের ফজিলত অনেক বেশি। আল্লাহ তাআলা এ দিনে জগৎ সৃষ্টির পূর্ণতা দান করেছিলেন। এই দিনেই হজরত আদম ও হাওয়া আলাইহিমাস সালামকে জান্নাতে একত্র করেছিলেন এবং এই দিনে মুসলিম উম্মাহ সাপ্তাহিক ঈদ ও ইবাদত উপলক্ষে মসজিদে একত্র হয় বলেই দিনটাকে ইয়াওমুল জুমা বা জুমার দিন বলা হয়।
নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষণা করেন, ‘যে ব্যক্তি পরপর তিনটি জুমা কোনো কারণ ছাড়াই ইচ্ছাকৃতভাবে ছেড়ে দেয়, আল্লাহ তাআলা ওই ব্যক্তির অন্তরে মোহর মেরে দেন।’ (তিরমিজি, আবু দাউদ, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ)ভাবনা বিষয় হলো, যে ব্যক্তির অন্তরে আল্লাহ তাআলা মোহর মেরে দেন, তার অন্তরে হেদায়েতের নূর প্রবেশ করার আর কোনো সুযোগ থাকে না। আর যে ব্যক্তি হেদায়েতের নূর থেকে বঞ্চিত সে ব্যক্তিই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত।
Leave a Reply