দৈনিক বঙ্গবন্ধু দেশ বার্তা : ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় শরীফাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাখায়াত হোসেনের বিরুদ্ধে ৭ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর অভিযোগে বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) দিনগত রাতে হয় ধর্ষণচেষ্টা মামলা। আর এ অভিযোগে হওয়া মামলায় প্রধান শিক্ষক কে গ্রেফতার করে ভাঙ্গা থানার পুলিশ।আজ শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরের পর তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।শিক্ষার্থীর পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বুধবার (৩০ নভেম্বর) উপজেলার শরীফাবাদ স্কুলে পরীক্ষা দিচ্ছিল ওই ছাত্রী। পরীক্ষায় নকল করার অভিযোগ তার খাতাপত্র নিয়ে যান এক শিক্ষিকা। এসময় প্রায় ঘণ্টাব্যাপী তার খাতা আটকে রাখা হয়। মেয়েটি কান্নাকাটি করলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে গিয়ে তার অনুমতি আনার কথা বলেন ওই শিক্ষিকা। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, পরে মেয়েটি প্রধান শিক্ষক শাখায়াত হোসেনের কাছে গিয়ে তার পরীক্ষার খাতা চাইলে তিনি তার রুমে যেতে বলেন। রুমে গেলে তার শ্লীলতাহানি ঘটান। একপর্যায়ে মেয়েটি চিৎকার দিলে তার মুখ চেপে ধরেন প্রধান শিক্ষক। ঘটনাটি কাউকে না জানানোর জন্য মেয়েটিকে হুমকি দেন। পরে মেয়েটি পরীক্ষা না দিয়ে বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের কাছে ঘটনা জানায়।বৃহস্পতিবার ওই ছাত্রী নিজেই ভাঙ্গা থানায় ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়। দুপুরের পর ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা স্কুলের সামনে অবস্থান নেয় ও সড়ক অবরোধ করে। তারা প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে। এবিষয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মো. শাখায়াত হোসেন বলেন, বুধবার ওই মেয়েটি পরীক্ষা দেওয়ার সময় নকলের অভিযোগে তার খাতা জব্দ করে সংশ্লিষ্ট হল রুমের শিক্ষক। পরবর্তী সময়ে মেয়েটি আমার কাছে আসে। বিস্তারিত ঘটনা বললে আমি তাকে বাড়ি যেতে বলি, পরের পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে বলি। পরে সে আমার পা জড়িয়ে ধরে মাফ চাইলে আমি পরীক্ষা হলে গিয়ে দায়িত্ব পালন করা শিক্ষককে খাতা ফেরত দেওয়ার অনুরোধ করি। কিন্তু হঠাৎ কেন, কী কারণে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করলো বুঝতে পারছি না।তিনি দাবি করেন, এটা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। সব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর বাবা বলেন, মীমাংসার জন্য প্রধান শিক্ষক শাখায়াতের পক্ষ থেকে বিভিন্ন মহল চাপ দিচ্ছে। আমি কোনো মীমাংসায় যাবো না। আইনগতভাবে যা হয়, আমি মেনে নেবো। ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়ারুল ইসলাম বলেন, থানায় লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে ওই শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়। শুক্রবার দুপুরের পর আটক শিক্ষককে আদালতে পাঠানো হয়।এবিষয়ে ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আজিম উদ্দিন বলেন, আমি এবং ভাঙ্গা থানার ওসি সরেজমিনে তদন্ত করেছি। ঘটনার সত্যতা মিলেছে।
Leave a Reply