দৈনিক বঙ্গবন্ধু দেশ বার্তা : আজ (৮ ডিসেম্বর) মাদারীপুরের কালকিনি মুক্ত দিবস ১৯৭১ সালের এই দিনে পাক হানাদার বাহিনীর হাত থেকে কালকিনি মুক্ত হয়।মুক্তিযুদ্ধে কালকিনি ছিল ২ নম্বর সেক্টরের অধীন। ১৯৭১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর পাকহানাদার বাহিনী রাজাকারদের সহযোগিতায় কালকিনি উপজেলার ফাসিয়াতলা বাজারে গণহত্যা ও অগ্নিসংযোগ চালায়। এ সময় ১৫০ জন মুক্তিকামী মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।২৪ সেপ্টেম্বর কালকিনির গোপালপুর ব্রিজে মাইন বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ফেরার পথে পাক আর্মির বুলেটে মারা যান শহীদ বীর বিক্রম নুরুল ইসলাম। চলতে থাকে খণ্ড যুদ্ধ। সর্বশেষে ৮ ডিসেম্বর কমান্ডার আ. রহমানের নেতৃত্বে শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা কালকিনির লালপুল সংলগ্ন ও থানার অভ্যন্তরে পাকহানাদার ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে কালকিনিকে হানাদারমুক্ত করেন। এ দিন হাজার হাজার নারী-পুরুষ বিজয়ের আনন্দে রাস্তায় বেরিয়ে আসেন। কালকিনি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে প্রকাশ্যে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়।
এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি পালন করা হয়। সকালে কালকিনি উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্যোগে আনন্দ র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পিংকি সাহা, সহকারী কমিশনার ভূমি কায়েসুর রহমান, কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামীম হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জলিল, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেক প্রমুখ।বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেক বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে আমরা জীবন বাজি রেখে স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করেছি। এ কারণে আমরা একটি স্বাধীন দেশ পেয়েছি।
মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আ. জলিল আকন বলেন, কালকিনির ফাঁসিয়াতলা বাজারে অসংখ্য মানুষকে পাকবাহিনী ও তাদের দোসর, রাজাকার, আলবদররা নৃশংসভাবে হত্যা করেন। ভূরঘাটার পাশে একটি ব্রিজের কাছে মানুষ ধরে এনে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে নদীতে ফেলে দিত পাকবাহিনী। ব্রিজের নিচে পানিতে মানুষের লাল রক্তে রঙ্গিন হওয়ায় এই ব্রিজের নাম হয় লাল পুল বা লাল ব্রিজ। আজও এই ব্রিজটির নাম মানুষের মুখে মুখে আছে। মুক্তিযোদ্ধাদের মারমুখীযুদ্ধে পরাস্ত হয়ে ৭ ডিসেম্বর রাতে পালিয়ে যায় পাকবাহিনী। এরপর ৮ ডিসেম্বর কালকিনি থানা হানাদার মুক্ত হয়।কালকিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার পিংকি সাহা বলেন, ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে লাল ব্রিজে মোমবাতি প্রজ্বলন করা হবে। এছাড়াও লাল ব্রিজ এলাকায় শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের পরিকল্পনা আছে, দ্রুত তা বাস্তবায়ন করা হবে।
Leave a Reply