দৈনিক বঙ্গবন্ধু দেশ বার্তা : গতকাল বুধবার (১৩ এপ্রিল) চৈত্র-সংক্রান্তি উপলক্ষে সকাল থেকে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার দাসেরহাট গ্রামের মধ্যপাড়ার অরবিন্দু ভৌমিকের বাড়ীতে নীল পূঁজা ও অস্টোক গানের আয়োজন করা হয়। মুখে রং মেখে ঢং সেজে বাদ্য-বাজনাসহ পুরাতনকে বিদায় জানাতে নানা ধরনের গান-বাজনা অনুষ্ঠিত হয়।
সেই সাথে চলে পূজা-অর্চনাও। ধর্মীয় গান গেয়ে নীল পূজায় অংশ নেয়া শিল্পীরা গ্রামের মানুষকে আনন্দ দিয়ে থাকেন। ৫ দিন ধরে চলবে নীল পূঁজা ও অস্টোক গানের আনুষ্ঠিকতা।
হিন্দু ধর্মের পৌরাণিক ধর্মমতে দেবতা শিব সমুদ্র মন্থনে বিষপান করে নীল কণ্ঠ ধারণ করেছিলেন। আবার বৈদিক হিন্দু ধর্মমতে, সূর্য অস্ত গেলে চারিধার গাঢ় অন্ধকার হয়ে আসে। গাঢ় অন্ধকার নীল বর্ণের হয়। এখানে বছরের আয়ুষ্কাল শেষ হওয়ার প্রতীকী হলো এই নীল। তাই চৈত্রসংক্রান্তির দিনে নীল পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
নীল পূঁজার নাচের দল বর্ণিল দেবদেবীর সাজে নানা বাদ্যযত্রের অনুসঙ্গে নাচ গান করে মানুষের মনোরঞ্জন করেন। প্রতিটি দলে ৫ থেকে ১০ জন থাকেন। রাধা, কৃষ্ণ, শিব, পার্বতি, নারদ সেজে সকাল থেকে মধ্য রাত পযর্ন্ত নাচ ও গান পরিবেশন করেন। এতে শিশুরাও অংশ নেয়।
গ্রাম বাংলার সকল মানুষের কাছে দারুণ উপভোগ্য এই নীল পূঁজা ও অস্টোক গান। এসব নাচের দল বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাল, ডাল আর নগদ অর্থ সংগ্রহ করে। নীল পূঁজা মূলত চৈত্রের শেষ দিনের হিন্দু ধর্মীয় উৎসব হলেও আবহমান বাংলার উৎসবে তা সার্বজনীন এক উৎসবে পরিণত হয়েছ।
মুকসুদপুর উপজেলার দাসেরহাট গ্রামের মধ্যপাড়ার অরবিন্দু ভৌমিক বলেন, চৈত্র সংক্রান্তিতে নীল পুঁজা ও অস্টোক গানের আয়োজন করা হয়। হাজার বছরের পুরনো সংস্কৃতি মুলধারা টিকিয়ে রাখার প্রয়াসে এ নীল পুঁজা ও অস্টোক গানের আয়োজন করা হয়েছে। এসময় গ্রামের ছোট শিশুদের নিয়ে শিব পাবর্তীর পাঁচালী প্রদশর্ন করানো হয়।
Leave a Reply