দৈনিক বঙ্গবন্ধু দেশ বার্তা : জানাযায় করোনার কারণে গত দুই বছর বিশ্ব ইজতেমা হয়নি। এবার ২০২৩ সালে এসে হচ্ছে বিশ্ব ইজতেমা। ১৩ জানুয়ারি, শুক্রবার ইজতেমার প্রথম পর্ব শুরু হবে। এরই মধ্যে টঙ্গীর তুরাগ তীরে মুসল্লিদের ঢল নেমেছে। মাঠে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় দুই তৃতীয়াংশ জায়গা পূরণ হয়ে গেছে।রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশ থেকে মুসল্লিরা আসছেন বিশ্ব ইজতেমা মাঠে। বিদেশিরাও এসেছেন। শীত উপেক্ষা করে চটের ছাউনির নিচে অবস্থান নিয়েছেন তারা।এবার ইজতেমার মাঠকে ৯১টি খিত্তায় ভাগ করা হয়েছে। বিভিন্ন জেলার মুসল্লিরা তাদের নিজ নিজ জেলার খিত্তায় অবস্থান নিচ্ছেন। ১৬০ একর খোলা ময়দানে বাঁশের খুঁটির ওপর পাটের চট দিয়ে টানানো হয়েছে বিশাল প্যান্ডেল। তবে বিদেশি মেহমানদের জন্য টিন দিয়ে করা হয়েছে আবাসস্থল।বুধবার (১১ জানুয়ারি) বিকেল পর্যন্ত ইজতেমা ময়দানে ২৫টি দেশের প্রায় দেড় হাজার বিদেশি মেহমান উপস্থিত হয়েছেন বলে জানিয়েছে আয়োজক কর্তৃপক্ষ।
দুপুরের দিকে ইজতেমা ময়দানের ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে রান্নার কাজ করছেন মুসল্লিরা। অনেকে নিজের বিছানাপত্র ঠিকঠাক করছেন। কেউ রয়েছেন ইবাদতে মশগুল। শুক্রবার বাদ ফজর থেকে আম বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হবে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের আনুষ্ঠানিকতা। এরপর ধারাবাহিকভাবে চলবে তিনদিনের ইজতেমার সব কার্যক্রম। রোববার (১৫ জানুয়ারি) আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে প্রথম পর্ব।
নেত্রকোনা থেকে ইজতেমায় আসা এবাদত হোসেন বলেন, তিন চিল্লা (চার মাস) শেষ করে মঙ্গলবার ইজতেমা ময়দানে চলে এসেছি। এখানে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও দ্বীনের জন্য মেহনত করছি। ইহকাল আমরা যেভাবে কাটাচ্ছি তাতে পরকালের জন্য কতটুকু আমল সঞ্চয় করতে পেরেছি তার জন্য চিন্তা করছি। নিজের ঈমানকে মজবুত করছি।কুমিল্লা থেকে আসা ইব্রাহিম মিয়া বলেন, ইজতেমায় এসে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা শুনে নিজের ঈমানকে আরও মজবুত করার চেষ্টা করি। আখেরাতের পূঁজি কীভাবে বাড়ানো যায় তার মেহনত করে যাচ্ছি।
এদিকে টঙ্গীর তুরাগ পাড়ে অবস্থান নিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। তারা মুসল্লিদের নিরাপত্তায় সচেষ্ট রয়েছেন। এছাড়া সাধারণ মানুষের ইজতেমা ময়দানে প্রবেশের সুবিধার্থে তৈরি করা হয়েছে ম্যাপ। গাড়ি পার্কিংয়ের বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছে পুলিশ। কোন রাস্তা কখন খোলা বা বন্ধ থাকবে সে নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।
ইজতেমার নিরাপত্তার জন্য ওয়াচ টাওয়ার ও সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। সাদা পোশাক ও পোশাকে থাকবে পুলিশ।পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ ১৪টি কন্ট্রোল রুম করেছে। র্যাবের কন্ট্রোল রুম থাকবে। এছাড়া ডিএমপি তার এলাকায় কন্ট্রোল রুম খুলবে। এসবি, এটিও, সিআইডি, নৌপুলিশ, অবজারভেশন টিম থাকবে, র্যাবের হেলিকপ্টার টহলে থাকবে। ডগ স্কোয়াড টিম, মোবাইল পেট্রোল টিম, বোম ডিসপোজাল টিম থাকবে।
এদিকে ইজতেমায় আসা-যাওয়ার জন্য পাঁচ জোড়া বিশেষ ট্রেন চালু করেছে রেলওয়ে। অন্যদিকে গাজীপুরের স্বাস্থ্য বিভাগের সবার ছুটি বাতিল করা হয়েছে ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত। এছাড়া বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা এবং ওষুধ প্রদান করবে শতাধিক স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান।
Leave a Reply