দৈনিক বঙ্গবন্ধু দেশ বার্তা : পদ্মার ভাঙনে শরীয়তপুর জেলাধীন জাজিরা উপজেলার দুটি ইউনিয়নে এক মাসে শতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন বিলীন হয়েছে। তাই দ্রুত ভাঙন রোধে স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন ভাঙন কবলিতরা। তবে জিওব্যাগ ও জিওটিউব ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা চালাচ্ছে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড। আর খাদ্য সহায়তা, টিন ও অর্থ দিচ্ছে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও প্রশাসন।
ভাঙন কবলিত এলাকার বাসিন্দারা জানান, গত এক মাস ধরে পদ্মার পাড় ভাঙছে। এতে জাজিরা উপজেলার পালেরচর ও বড়কান্দি ইউনিয়নে শতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন বিলীন হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তরা কেউ অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন, কেউ আবার ভাড়া বাড়িতে উঠেছেন।
ভাঙনকবলিত পালেরচর ও বড়কান্দি ইউনিয়নের কয়েকজন বাসিন্দা জানান, বেশ কয়েক বছরের ভাঙনে তাদের ফসলি জমি, গাছপালা ও বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। যতটুকু বাকি ছিল তার মধ্যে গত এক মাসের ভাঙনে অন্তত ১০০ ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ঝুঁকিতে আছে আরও ২০০ পরিবার। ভাঙন রোধে তারা দ্রুত স্থায়ী বেড়িবাঁধ চান।
পালেরচর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবুল হোসেন ফরাজী বলেন, গত এক মাস ধরে পালেরচর ইউনিয়নে পদ্মার ভাঙন চলছে। আমরা প্রতিনিয়ত ভাঙন কবলিতদের খোঁজ-খবর রাখছি। যতটুকু পারছি সহযোগিতা করছি।
জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল হাসান সোহেল বলেন, ভাঙন কবলিতদের পাশে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন সবসময় আছে, থাকবে। ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত ১৩০ পরিবারের প্রত্যেককে ৩০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে। ৮০টি পরিবারকে দুই হাজার করে টাকা এবং ২৫ পরিবারকে দুই বান্ডিল টিন ও ছয় হাজার করে টাকা দেওয়া হয়েছে।
শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম আহসান হাবীব বলেন, জাজিরা উপজেলার পালেরচর ও বড়কান্দি ইউনিয়নে পদ্মার তীরবর্তী অংশে ভাঙন দেখা দিয়েছে। আগের ফেলানো জিওব্যাগ সরে যাচ্ছে। তবে ভাঙন রোধে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এরই মধ্যে পালেরচর ও বড়কান্দি ইউনিয়নে ভাঙন রোধে দেড়লাখ জিওব্যাগ ও জিওটিউব ফেলা হয়েছে। আরও ২৫ হাজার ফেলা হবে।
এদিকে, সম্প্রতি পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম ভাঙন কবলিত পালেরচর ইউনিয়নের কাথুরিয়া এলাকা পরিদর্শনে গেলে ওই এলাকার বাসিন্দারা স্থায়ী বেড়িবাঁধের দাবি জানান।
এ বিষয়ে পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম বলেন, মানুষের পাশে দাঁড়ানো আমাদের প্রথম কাজ। আমরা জানি, পালেরচর ও বড়কান্দি ইউনিয়ন ভাঙনের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা। আমরা জিওব্যাগ ও জিওটিউব দিয়ে ভাঙন রোধ করছি। সবাই জানে নড়িয়ার ১০ কিলোমিটারে এখন আর ভাঙন নেই। টেকসই বাঁধ দেওয়া হয়েছে। আমরা নড়িয়ার মতো জাজিরাকেও সেভাবে টার্গেট করেছি। বন্যা ও নদী ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে চাল, অর্থ ও টিন দিয়ে সাহয্য করেছি।
Leave a Reply