দৈনিক বঙ্গবন্ধু দেশ বার্তা : পৃথিবীর অন্যতম একটি পুষ্টিকর ফল অ্যাভোকাডো।এ ফল এখন বাংলাদেশের মাদারীপুর জেলার হর্টিকালচার সেন্টারে অ্যাভোকাডোর ফলের চাষ চলমান। এক সময় সারাদেশে এ ফলের চারা বিস্তার করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন উদ্যানতত্ত্ববিদরা।
আগামী কয়েক বছরের মধ্যে এটি বাণিজ্যিক আকার ধারণ করবে। এ ফল পৃথিবীর মানুষের জন্য সৃষ্টিকর্তার একটি বড় উপহার। কারণ এর মধ্যে রয়েছে মানুষের দেহের জন্য প্রয়োজনীয় সব ভিটামিন ও মিনারেল ।
পাশাপাশি এটি শিশু ও গর্ভবতী মায়েদের জন্য একটি উৎকৃষ্ট মানের খাবার। শিশুদের পুষ্টি শোষণে সহায়তা করে। যকৃৎকে সুরক্ষা দেয়। জন্ডিস প্রতিরোধে সহায়তা করে। গর্ভবতী মায়ের ক্ষেত্রে গর্ভপাত রোধ করে এবং স্বাভাবিক গর্ভধারণে সহায়ক হয়।
মাদারীপুর হর্টিকালচার সেন্টারে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেল এ অ্যাভোকাডো ফলের গাছ। সেখানে তিনটি গাছে শতাধিক ফল এসেছে। গাছগুলো ছোট আকারের। ফলগুলো অনেকটা পেয়ারার মতো, একসঙ্গে কয়েকটি ধরে রয়েছে, যা গাঢ় সবুজ বর্ণের। এর মধ্যে বড় একটি গাছে কয়েক বছর থেকে ফল ধরছে। এবার বিশেষ যত্নে এ গাছের অর্ধশত পরিপক্ব ফল পাওয়া গেছে।
উদ্যানতত্ত্ববিদরা বলছেন, অ্যাভোকাডোতে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন, খনিজ পদার্থ, ভিটামিন এ, সি, ই ও কে রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে পটাসিয়াম, যা কলার চেয়ে ৬০ শতাংশ বেশি। এছাড়া ১৮ ধরনের অ্যামাইনো অ্যাসিড এবং ৩৪ শতাংশ স্যাচুরেটেড ফ্যাট রয়েছে।
সেজন্য অন্যান্য ফলের তুলনায় এ ফলের মিষ্টতা কম। ডায়াবেটিস রোগীর জন্য সবচেয়ে উপযোগী ফল। এছাড়া উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ভালো কোলেস্টেরল রয়েছে, যা শরীরে থাকা ক্ষতিকর কোলেস্টরেল কমায়। সেগুলো অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবেও শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বের করতে সহায়তা করে।
এছাড়া সবার জন্য মানসিক চাপ, হতাশা দূরীকরণ, ক্ষুধা বৃদ্ধি, সুনিদ্রা নিশ্চিত করা এবং দেহের ক্ষতিকর দ্রব্যাদি প্রস্রাব ও মল আকারে বের করে দেহকে সুস্থ রাখতে এ ফল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
মাদারীপুর হর্টিকালচার সেন্টারের উপ-পরিচালক এস, এম, সালাহউদ্দিন বলেন, এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে দামি ফল। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ফল যেভাবে দেশে ডায়াবেটিস রোগী বাড়ছে, তাতে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় ফল।অ্যাভোকাডোর চারা আমরা ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ড থেকে এনছিলাম সাধারণত কলমের চারায় পাঁচ বছর পর ও বীজের চারায় আট বছর পর ফল ধরে।
তিনি আর ও বলেন, ফলটি ইউরোপ, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়ায় দারুণ চাহিদাসম্পন্ন ও দামি ফল। ঢাকার কোনো কোনো জায়গায় এ অ্যাভোকাডো ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। ফলে এটির বাণিজ্যিক চাষও অত্যন্ত লাভজনক হবে।
শুধু মাদারীপুর হর্টিকালচার সেন্টার নয়, আমরা প্রতিটি সেন্টারে চারা দিয়েছি। প্রতিটি সেন্টারে ফল এসেছে। সেগুলো সম্প্রসারণ হচ্ছে। আগামী দশ-বিশ বছর পর এ ফল দেশের চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি হবে। সে সময় রপ্তানির ফলে এ অ্যাভোকাডো বড় ভূমিকা রাখবে।
Leave a Reply