দৈনিক বঙ্গবন্ধু দেশ বার্তা : ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় বিনা ওয়ারেন্টে আটকের পর থানায় নিয়ে দুই কৃষককে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে। আদালত থেকে জামিন পেয়ে ওই দুই কৃষককে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত ওই দুই কৃষক হলেন মৃত আব্দুল ওসমান খানের ছেলে আব্দুল হক খান (৭০) ও মৃত আফতাব মোল্লার ছেলে আব্দুল কুদ্দুস মোল্লা (৬৫)। তাদের বাড়ি সালথা উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের বাইলা গ্রামে।
আহত কৃষক কুদ্দুস মোল্লা বলেন, ইফতারির পরে আমাদের গ্রামের পাশের পাড়ায় গণ্ডগোল হয়। ওই হট্টগোলের শব্দ শুনে কী হচ্ছে দেখতে বের হলে পুলিশ আমাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এরপর গারদ খানার মধ্যে চিৎ করে শুইয়ে দিয়ে থানার ওসি বেদম পেটায়। তিনি বলেন, আমি তাদের অনেক অনুনয়-বিনয় করেছি যে, আমি সারাদিন রোজা রেখে পেঁয়াজ ক্ষেতে কাজ করেছি। খাটুনির শরীর আমার। আমাকে মাইরেন না। তারপরেও শোনেনি তারা।
নির্যাতনের শিকার অপর কৃষক আব্দুল হক খান বলেন, আমাকে থানায় নিয়ে প্রথমে এসআই মিজান দেওয়ালের সঙ্গে বুক লাগিয়ে হাত ওপরে দিয়ে পেছনে মারতে থাকে। আমি এভাবে দাঁড়ায় থাকতে পারতেছি না বললে আমাকে গারদে ঢুকিয়ে সেখানে চিৎ করে শুইয়ে পেছনে পেটানো হয়। মারতে মারতে আধমরা করে ফেলে রাখে।এদিকে, সেহরির সময় তাদের মধ্যে কারা রোজা রাখবেন জিজ্ঞাসা করলে চারজন রোজা রাখবেন বলে জানান। তবে তাদের সেহরির জন্য ইফতারির সময় রান্না করা ঘেমে ওঠা খিচুড়ি খেতে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। আব্দুল হক বলেন, ‘দিনভর রোজা, ইফতারি করি নাই। সেই অবস্থায় আমাগে ধইর্যা নিছে। তারপর সেহরির সময় আলা খিচুড়ি (ঘেমে ওঠা) খাবার দিছে। আর কিছু দেয় নাই।’এদিকে, থানায় এভাবে মারধরের পর আদালতে বিষয়টি নিয়ে কিছু না বলার জন্য হুমকি দেওয়া হয় বলেও তারা অভিযোগ করেন। অন্যথায়, আবার ধরে এনে মারধর করা হবে বলেও ভয়ভীতি দেখানো হয়।
এ বিষয়ে সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ সাদিক জাগো নিউজকে বলেন, সেখানে ওই রাতে দুই নারীকে মারধর ও কোপানো হয়। তাদের একজন ঢাকায় চিকিৎসা নিচ্ছে। দুটি বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ঘটনায় অন দ্য স্পট আমরা তাদের আটক করে দ্রুত বিচার মামলায় আদালতে পাঠিয়েছি। এর বেশি কিছু না। আর সেহরির সময় তাদের নষ্ট খিচুড়ি খাওয়ানোর অভিযোগও সঠিক নয়।সি বলেন, আটক হলেও তাদের মানবাধিকার আছে। আদালত বিচার করবে তারা অপরাধী কী না।
Leave a Reply